শিক্ষার্থীর অজান্তেই বিভিন্ন সময় সার্টিফিকেট নানা রকম তথ্য ভুল হয়ে থাকে যেমন পিতা মাতার নাম বা নিজের নাম কিংবা জন্ম তারিখ সার্টিফিকেটে ভুল হয়। কিভাবে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে হয় তা আমরা আলোচনা করব। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সার্টিফিকেট সংশোধন নিয়ম। রেজিস্ট্রেশন কার্ড, এডমিট কার্ড, মার্কশিট ও সার্টিফিকেট সংশোধনের আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে সংশোধিত নতুন সার্টিফিকেট কিভাবে উত্তোলন করবেন সে সকল বিষয়ে ধাপে ধাপে নিচে উল্লেখ করছি।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নাম সংশোধন
নিজের নাম অথবা পিতা মাতার নাম এবং বয়স সংশোধন প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়েছে অনলাইনে মাধ্যমে যেকোনো শিক্ষার্থী নিজের চাহিদা অনুযায়ী সার্টিফিকেট সংশোধন করতে পারবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনের জন্য দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হতে পারে যেমনঃ সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন বা জন্ম সাল পরিবর্তন।
কারিগরি বোর্ডে এসএসসি সার্টিফিকেট সংশোধন নিয়ম
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসির সার্টিফিকেট ভুল সংশোধন করতে আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে অনলাইনে আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই নিম্নলিখিত কাগজপত্র আপনার কাছে থাকতে হবে।
এসএসসি সার্টিফিকেট সংশোধন কি কি প্রয়োজন
প্রমাণস্বরূপ অষ্টম শ্রেণীর সকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে-
- অষ্টম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন কার্ড
- অষ্টম শ্রেণীর এডমিট কার্ড
- অষ্টম শ্রেণীর সার্টিফিকেট
- অষ্টম শ্রেণীর মার্কশিট
- পিতা মাতার নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার স্মার্ট আইডি কার্ডের কপি।
ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট সংশোধন কি কি প্রয়োজন
ডিপ্লোমার সার্টিফিকেট বা রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংশোধনের জন্য আপনার এসএসসির সার্টিফিকেট সঠিক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে এসএসসির যেসকল ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে।
- এসএসসি সার্টিফিকেট
- এসএসসি মার্কশিট
- এসএসসি রেজিস্ট্রেশন কার্ড
- এসএসসি এডমিট কার্ড
- পিতা মাতার নাম সংশোধনের জন্য পিতা-মাতার স্মার্ট আইডি কার্ডের কপি প্রয়োজন হবে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এইচএসসি সার্টিফিকেট সংশোধন
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বা টেকনিকাল স্কুল এন্ড কলেজের সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, এডমিট কার্ড এবং মার্কশিট সংশোধনের জন্য উল্লেখিত এসএসসি পাশের সকল তথ্য ও পিতামাতার ভোটার কার্ড প্রয়োজন হবে। উল্লেখ্য যে শিক্ষাক্রমের সার্টিফিকেট সংশোধন করবেন তার পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রমের সকল তথ্য সঠিক থাকতে হবে।
সার্টিফিকেট সংশোধন অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া
সংশোধনের আবেদন করার জন্য প্রথমেই আপনাকে কারিগরি বোর্ডের ই-সেবা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে নিচের ছবির মত দেখতে পাবেন। এখান থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক কর্নারে ক্লিক করতে হবে।
পরবর্তী ধাপে আপনার সামনে কিছু নির্দেশনা প্রদর্শিত হবে সেগুলো ভালো করে পড়ে নিবেন। এবার লক্ষ্য করুন উপরের দিকের কর্নারে ‘নতুন সেবার জন্য আবেদন করুন’ লেখা আছে সেখানে ক্লিক করতে হবে।
এবার আপনাকে যে সার্টিফিকেট সংশোধন করবেন তার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার, শিক্ষাবর্ষ এবং মোবাইল নাম্বার দিয়ে সাবমিট করতে হবে তারপর আপনার ফোনে একটি ওটিপি যাবে উক্ত ওটিপি প্রদান করতে সাবমিট করুন।
পরবর্তী ধাপে উপরের ছবির মত উইন্ডো আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে। এখানে আপনাকে প্রথমে ইনস্টিটিউট নাম সিলেক্ট করতে হবে অর্থাৎ আপনি যে প্রতিষ্ঠান লেখাপড়া করেছেন সেটা নির্বাচন করতে হবে। এবার শিক্ষা কারিকুলাম নির্বাচন করুন।
এবার নিচের ছকে তথ্য পূরণ করতে হবে। বর্তমান তথ্য রেজিস্ট্রেশন কার্ড অনুযায়ী অর্থাৎ আপনি যে সার্টিফিকেট বা রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংশোধন করতে চাচ্ছেন তার তথ্য প্রদান করতে হবে। এখানে আপনার সঠিক রোল এবং পাশের সাল লেখার পরে নিচের তথ্যগুলো অটোমেটিক পূরণ হয়ে যাবে।
এখন আপনাকে ডান পাশের ছকটি পূরণ করতে হবে। এখানে আপনি প্রমান স্বরূপ যে সকল তথ্য দিবেন যেমন জেএসসি বা এসএসসি তথ্য শিক্ষা বোর্ড নাম, পরীক্ষার রোল এবং পাসের সাল। সঠিকভাবে পূরণ করলে নিচের ঘরে গুলো অটোমেটিক পূরণ হয়ে যাবে। এখানে আপনার সংশোধিত তথ্য দেখতে পারবেন অর্থাৎ আপনার সংশোধিত সঠিক তথ্য প্রদর্শিত হবে। এবার নিচের দিকে যোগাযোগের ঠিকানা প্রদান করে আবেদন পত্রটি সেভ করতে হবে।
পরবর্তী ধাপে আপনি কোন কোন ডকুমেন্ট সংশোধন করবেন নির্বাচন করতে হবে যেমন এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, সার্টিফিকেট, মার্কশিট। আপনি যেগুলো সংশোধন করতে চান প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো নির্বাচন করুন। নির্বাচন করার সাথে সাথে আপনি পাশে দেখতে পাবেন কত টাকা প্রয়োজন হবে।
প্রয়োজনীয় টাকার পরিমানঃ—
রেজিস্ট্রেশন কার্ডে — ৫০০ টাকা
এডমিট কার্ড — ৫০০ টাকা
সার্টিফিকেটের — ২০০ টাকা
মার্কশিটের — ৭৫ টাকা
Bteb certificate correction online
এবার প্রমাণস্বরূপ পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রমের সকল তথ্য আপলোড করতে হবে এবং পিতা মাতা নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে তাদের ভোটার আইডি কার্ড আপলোড করতে হবে। সকল মূল ডকুমেন্ট রঙিন স্ক্যান করে আপলোড করুন। ফাইল ফরম্যাট .pdf এবং সর্বোচ্চ ফাইল সাইজ 2mb। সকল ডকুমেন্টস আপলোড করা হয়ে গেলে উপরের কর্নারে ক্লিক করুন।
এখন আপনার সামনে সম্পূর্ণ আবেদনটি প্রদর্শিত হবে সেটি ভালোভাবে চেক করে নিন কোথাও কোন ভুল আছে কিনা ভুল থাকলে পুনরায় ঠিক করুন। সকল তথ্য সঠিক থাকলে আবেদন পত্র টি প্রিন্ট করে নিন এবং পরবর্তী ধাপে পেমেন্ট অপশনে গিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং বা ডিজিটাল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারবেন। পেমেন্ট সম্পূর্ণ হলে আপনার ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে একটি ইউজার আইডি পাঠানো হবে। যা দিয়ে আপনি পরবর্তীতে আবেদনের অবস্থা দেখতে পারবেন এবং ওই এসএমএসে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নাম্বার প্রদান করা হবে। উক্ত নাম্বারে যোগাযোগ করুন অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এগিয়ে আপনারা আবেদনটি এপ্রুভ করে নিতে হবে।
আপনার স্কুল বা কলেজ থেকে এপ্রুভ হয়ে গেলে কিছুদিন অপেক্ষা করুন। এরপর বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন হবে। বোর্ড থেকে অনুমোদন হওয়ার পরে আপনার সংশোধিত সার্টিফিকেট উত্তোলনের জন্য মোবাইলে একটি এসএমএস পাঠানো হবে। সংশোধিত সার্টিফিকেট উত্তোলনের জন্য আপনার কাছে থাকা মূল সার্টিফিকেট গুলো সাথে নিয়ে বোর্ডে জমা দিয়ে নতুন সার্টিফিকেট তুলতে হবে।
কলেজ থেকে এপ্রোভ করার আনুমানিক কত লাগে সংশোধন হতে জানাবেন প্লিজ
কলেজ থেকে এপ্রোভ করার পর কত দিন সময় লাগবে সংশোধন হতে জানাবেন দয়া করে????
এক মাস সময় লাগে
পলিটেকনিকে রেজিস্ট্রশন কার্ড ও এডমিট কার্ড ঠিক হতে কতদিন সময় লাগে ভাইয়া। একটু দয়া করে জানাবেন।