গর্ভবতী হয়েছে কি-না বোঝার প্রথম লক্ষণ হলো পিরিয়ড বা মাসিক মিস হওয়া। এছাড়াও অনেক কারণে পিরিয়ড মিস হতে পারে। কোনো নারীর পিরিয়ড মিস হয়েছে মানেই এই না যে সে গর্ভধারণ করেছে। তাই প্রেগন্যাস্টি বোঝার জন্য প্রেগন্যাস্টি টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাসিক বন্ধ হয় গর্ভবতী হবার কারণেই। মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায় এ প্রশ্ন সব নারীর মানে থাকে সেগুলো জানাব।
প্রেগন্যান্সি কতদিন পর বুঝা যায়
সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণীয় বিষয় হলো মাসিক মিস। বিশেষজ্ঞদের মতে ৯০ শতাংশ মহিলার মাসিক মিস হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে গর্ভধারণের লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। প্রায় ৮০ শতাংশ নারীই গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বমির সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। প্রেগনেন্সির সম্পূর্ণ লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
চিকিৎসকদের মতে, মিলনের সঙ্গে সঙ্গেই গর্ভধারণ হয় না। এর জন্য কিছু দিন সময় লাগে। সাধারণত, একটি শুক্রাণুর জরায়ুতে পৌঁছাতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে। এরপর ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত হলেই ভ্রুণ তৈরি হয়। একটি শুক্রাণু গর্ভে পাঁচদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এই সময়ের মধ্যে শুক্রাণু সঙ্গে ডিম্বাণু মিলিত হয়ে নারী গর্ভবতী হন।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার সঠিক সময়
একজন মহিলার মাসিকের সম্ভাব্য সময়ের মধ্যে মাসিক শুরু না হলে এবং জন্মনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার ছাড়া সহবাস করে থাকলে, প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হবে। ইতিপূর্বেই জানিয়েছি সহবাসে সঙ্গে সঙ্গেই কোনো মহিলা গর্ভবতী হয় না। মাসিক মিস হওয়ার পরে প্রেগন্যান্সি টেস্ট চেষ্টা করে দেখতে পারেন তবে এক্ষেত্রে সঠিক রিপোর্টের জন মাসিক মিস হওয়ার ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করালে ঠিক রিপোর্ট জানতে পারবেন।
মাসিক না হলে কি প্রেগন্যান্ট হয়
চিকিৎসকদের মতে, এ প্রশ্নের উত্তর: না। বিভিন্ন কারণে আপনার মাসিক মিস হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাসিক মিস হওয়া গর্ভবতী হওয়ার একটি অন্যতম লক্ষ। সম্ভাব্য সময়ের মধ্যে মাসিক শুরু না হলে অবশ্যই আপনার প্রেগন্যান্সি টেস্ট করানো উচিত। এটি বাসায় নিজেই করতে পারবেন বা ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
শারীরিক মিলনের কত দিন পর প্রেগন্যান্ট হয়
শারীরিক মিলনের পরেই কেউ প্রেগন্যান্ট হয় না। প্রেগন্যান্ট হতে সহবাসের পর কিছু দিন সময় লাগে। শারীরিক মিলনের পরে যদি পিরিয়ড মিস হয়। তহলে পিরিয়ড মিস হওয়ার ১০ থেকে ১৪ দিন মধ্যে প্রেগনেন্সি টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হবেন৷ মাসিক মিস হওয়ার পরে প্রথমবার টেস্ট করে যদি নেগেটিভ হয় এবং পরবর্তীতে যদি আপনার পিরিয়ড না হয় তাহলে কিছু দিন পর পুনরায় টেস্ট করবেন ৷ এবারে যদি ফলাফল নেগেটিভ আসে তাহলে ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিন।
প্রেগন্যান্ট বোঝার লক্ষণ
প্রেগন্যান্ট হয়েছেন কি-না তা বুঝার অনেক গুলো লক্ষন আছে। নিচের লক্ষন গুলো যদি আপনার মধ্যে দেখা দেয় তাহলে দ্রুত প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিশ্চিত হত হবে।
- মাসিক মিস হওয়া: সম্ভাব্য সময়ে পিরিয়ড না হওয়া।
- খাবারে অনীহা: খাবারের প্রতি অরুচি তৈরি হয় এবং খাদ্যাভ্যাসের স্বাদ পরিবর্তন ।
- স্তনের পরিবর্তন: প্রেগন্যান্ট নারীদের শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায় যেমন: স্তন নরম হয়ে যাওয়া, স্তন ভারী অনুভুত হয় এবং স্তনে হাল্কা ব্যাথা।
- বমি বমি ভাব: গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে পেটে অস্বস্তি, বমি বমি ভাব এবং মাঝে মাঝেই বমি পায়। এ রকম বিষয় গুলো দেখা দিলে অবশ্যই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাবেন।
- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ।
- গলা শুকিয়ে আসা।
- শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া
- শরীরের ক্লান্তি বৃদ্ধি পায় ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ জিপি ইন্টারনেট অফার ২০২৪
কীভাবে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে
প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার অনেকগুলো উপায় আছে। এর মধ্যে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট ব্যবহার করে নিজেই সহজে ও কম খরচে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে পারবেন। এছাড়াও বর্তমানে কিছু আধুনিক পদ্ধতিতে প্রেগন্যান্সি টেস্টে করা হয়। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট পাওয়া যায়। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট এর ব্যবহার
শুধুমাত্র সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। তবে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে প্রথম প্রস্রাব দিয়ে টেস্ট করালে সঠিক ও নির্ভুল রিপোর্ট পাওয়া যায়।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিটের ব্যবহারবিধি ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। প্রতিটি টেস্ট কিটের প্যাকেটের ভিতরে ব্যবহারের নিয়ম লেখা থাকে তা মনোযোগ সহকারে পড়ে নিবেন। এবং সেই অনুযায়ী টেস্ট করুন।
সচরাচর বাজারে যেসব প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট পাওয়া যায়, সেগুলোর প্যাকেট খুললে দেখতে পাবেন একটি টেস্ট কিট বা বক্স বা লম্বা কাঠি থাকে। ভালো করে লক্ষ করলে টেস্ট কিটে S, T এবং C লেখা দেখতে পাবেন। S লেখা ঘরে কয়েক ফোঁটা প্রস্রাব দিতে হবে এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। এবার C ও T লেখা ঘরের দিকে লক্ষ করুন । শুধুমাত্র ‘C’ লেখা ঘরে একটি দাগ দেখা গেলে পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ, অর্থাৎ আপনি হয়তো গর্ভবতী না। আর ‘C’ ও ‘T’ দুইটি ঘরেই দাগ দেখা গেলে ফলাফল পজিটিভ, অর্থাৎ আপনি গর্ভবতী।
আশাকরি আপনার যে প্রশ্ন ছিলো, প্রেগন্যান্সি কতদিন পর বুঝা যায়, প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার সঠিক সময়? মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়, মাসিক না হলে কি প্রেগন্যান্ট হয়? প্রেগন্যান্ট হওয়ার কত দিন পর মাসিক বন্ধ হয়, কীভাবে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে, প্রেগন্যান্ট বোঝার লক্ষণ, শারীরিক মিলনের কত দিন পর প্রেগন্যান্ট হয় ইত্যাদি প্রশ্নের সকল উত্তর পেয়েছে।
1 thought on “মাসিক মিস হওয়ার কত দিন পর প্রেগন্যান্ট বোঝা যায়”